চতুর্থবারের মতো শেখ হাসিনার হাতে বাংলাদেশ
শেখ হাসিনার সালাম নিন নৌকা মার্কায় ভোট দিন। একাদশ জাতীয় সংসদেও ভোটের আগে সারা বাংলাদেশে র্যাপ সঙ্গীতের মতো পথেঘাটে মাঠে এই সুর বেঁজেছে। যেন শেখ হাসিনা একাই লড়ছেন বাংলাদেশ জুরে।গতকাল ভোটের পরেও অভূতপূর্ব একই সুর একই র্যাপ শেখ হাসিনার হাতেই বাংলাদেশ। ঢাকার সিটি কলেজ কেন্দ্রে নিজের ভোট দিয়ে। সবার আগে দুই আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে দিয়েছেন ভিন্ন চিহ্ন। অর্থাৎ আমার হাতেই বাংলাদেশ।
বিরোধি ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির নেতা ড. কামাল হোসেন ও বিএনপি মাহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম যদিও অভিযোগ করেছেন ,ভোট কেন্দ্র দখল, ভোটারদের ভোট দিতে না পারার।ভোটারদের ভয়ভীতি, ব্যালট বাক্স ছিনতাই ও একতরফা নির্বাচনের।কিন্তু টিকছেনা তাদের অভিযোগ। আন্তর্জাতিক ভোট পর্যবেক্ষকদের ভারতীয় অংশ ইতিমধ্যেই বলেছে, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া সারা দেশে ভোটাররা ভোট দিয়েছে। ভোট হয়েছে শান্তিপূর্ণ। সুতরাং বিরোধী দল যাই অভিযোগ করুক তাতে খুব একটা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছেনা এবারের নির্বাচন।
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগই ২৯৯ আসনের বেশিরভাগ আসনে বিজয়ি হয়ে আসছে। এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চতুর্থবার সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন। এরমধ্যে ১৯৯৬ সালে একবার নির্বাচনে জয়ি হয়ে এসেছিল আওয়ামী লীগ। এরপরে বিরতির পর ২০০৮ সাল থেকে টানা ৩ বার শেখ হাসিনা সরকার গঠন করল।
নির্বাচনি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অতন্ত্য দক্ষতার সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনা করেছেন। তিনি গতবারের একতরফা নির্বাচনের বদনাম ঘুঁচাতে সচেষ্ট হয়েছেন সকল দলকে নির্বাচনে নিয়ে আসতে। বিশেষ করে বিএনপিকে তার নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি থেকে সরিয়ে এনে। দলীয় সরকারের অধিনে নির্বাচনে নিয়ে এসেছেন। বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেও শেখ হাসিনা বিএনপি নেতৃবৃন্দকে তার সঙ্গে সংলাপে বসাতে পেরেছেন। রাজনীতি থেকে প্রায় বিদায় নেয়া বর্ষীয়ান ড, কামাল হোসেনকে আবারো নির্বাচনে নিয়ে এসেছেন। যা পশ্চিমা শক্তিকে নির্বাচন সম্পর্কে অনেকটা আশ্বস্ত করেছে। দলের ভিতরে বিশেষ করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদকে নিজের আয়ত্বে রাখতে পেরেছেন। আওয়ামী জোটের অন্যান্য দলকেও সামলেছেন যথাযথভাবে।আওয়ামীলীগের ভিতরে প্রার্থী নিয়ে উপদলীয় কোন্দল কঠোর হস্তে দমন করেছেন। দেশের প্রশাসনিক ও সামরিক ব্যবস্থাপনাও যথাসময়ে বিশেষ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। এর একটি হলো জাতীয় সংসদ ভেংগে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা এবারের নির্বাচনে রাজনৈতিক ইসলাম ও সাম্প্রদায়িকতাকেও সমাল দিয়েছেন দক্ষতার সঙ্গে। নির্বাচনের আগে কউমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি ও হেফাজতে ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ ইসলাম বিরোধী এই শ্লোগানকেমোকাবেলা করেছেন।আবার বরাবরের মতো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমনও প্রতিহত করেছেন তিনি। এবারের নির্বাচনের আগে বা পরে দেশের সংখ্যালঘু ভোটাদের উপর আক্রমন হয়নি।
একইসঙ্গে দেশের ভোটারদের সামনে নিয়ে এসেছেন,অর্থনৈতিক উন্নয়নের আশাবাদ। তাই আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্লোগান দেয়া হয়েছে, উন্নয়নের জন্য দরকার শেখ হাসিনার সরকার। উন্নয়নের পক্ষ নিন নৌকা মার্কায় ভোট দিন। রাজনৈতিক ইশতেহারে ব্যাপক কর্মসংস্থানের আশ্বাস দিয়েছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বলেছেন। ভোটাররা আশ্বাস রখেছেন তার এই ইশতেহারের প্রতি।ভোট কেন্দ্রও আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় সামর্থ দেখাতে সমর্থ হয়েছে। বিরোধী ঐক্যফ্রন্ট যেভাবে ভোট বিপ্লবের প্রত্যাশা করেছিল। আওয়ামীলীগের সামর্থের কাছে এই ভোট বিপ্লব নিস্তেজ হয়ে পড়ে।
সব মিলিয়ে সারা দেশে আওয়ামী লীগের প্রার্থী যেই থাকুক জিতেছেন শেখ হাসিনা। লড়েছেন শেখ হাসিনা।এই প্রত্যয় শেখ হাসিনা দেখিয়েছেন, নির্বাচনের শুরু থেকেই। তিনি বিদেশি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন এবারের আমরাই ক্ষমতায় আসবো। গতকাল ঢাকার সিটি কলেজ কেন্দ্রে শেখ হাসিনা বোন শেখ রেহানা ও কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল যখন ভোট দেন। তখনো শেখ হাসিনা আঙ্গুল তুলে ভি চিহ্ণ দেখিয়েছেন।
কোন মন্তব্য নেই
আপনার মন্তব্য/মতামত প্রদান করার জন্য ধন্যবাদ।
জয়বাংলা নিউজ.নেট।