চলচ্চিত্র শিল্পীদের ডেঙ্গু মশা নিধন কার্যক্রম একটি শুভ উদ্যোগ
রূপম বড়ুয়া বায়রণ, সম্পাদক, জয়বাংলা নিউজ:
শিল্পীরা আমাদের সমাজের দর্পণের ন্যায়। সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন সমস্যা যেমন তারা তুলে ধরেন তেমনি সমস্যার সমাধানেও তারা তাদের প্রতীকী কার্যক্রমের মাধ্যমে অপরিসীম ভূমিকা পালন করেন। আমরা সবাই জানি যে বর্তমানে ডেঙ্গু রোগ আমাদের দেশে বিশেষ করে ঢাকা শহরে মহামারী আকার ধারণ করেছে। আর এর সমাধানের জন্য সবচেয়ে বেশি যা দরকার তা হল আমাদের সমাজের প্রত্যেকটি স্তরের মানুষের সচেতনতা এবং আমাদের বাসস্থানসহ পারিপার্শ্বিক পরিবেশের পরিচ্ছন্নতা। আর এই সচেতনতা ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম আরও বেগবান করতেই চলচ্চিত্র শিল্পীরা তাদের নিজেদেরই কর্মস্থল এফডিসিসহ আরও কয়েকটি স্থানে ডেঙ্গু সচেতনতা কার্যক্রম চালায়, মাইকের মাধ্যমে মিডিয়ায় নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেয়, চারপাশের আবর্জনা ঝাড়ু দেয় এবং ফগার মেশিন দিয়ে মশা দমন করেন।
এটি ছিলো একটি প্রতীকী কার্যক্রম এবং এর উদ্দেশ্য কেবল সাধারণ মানুষজনকে ডেঙ্গু হতে প্রতিকার পাবার জন্য সবাইকে সচেতন করা। আর চলচ্চিত্র শিল্পীদের মানুষ অনুসরণ করে হলেও, তাদের এই প্রতীকী কার্যক্রম দেখে উৎসাহিত হয়ে মানুষ তার চারপাশ পরিষ্কার রাখবে, নিজে তো সচেতন হবেই আরও দশজনকে সচেতনতার পরামর্শ দিবে- এটিই ছিলো মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু কষ্টের বিষয় এই যে কিছু স্বার্থান্বেষী ও ঈর্ষান্বিত মহল এই শুভ কাজটির তিরস্কার করছে ও নিরুৎসাহিত করছে। অথচ শিল্পীরা যেসকল নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো ঐ স্বার্থান্বেষী মহলও কিন্তু পালন করছে। অথচ আপনারা জানেন ডেঙ্গু মশা নিধন কিন্তু শিল্পীদের কাজ নয়। তারা নিজেদের দায়িত্ববোধ থেকে যেটুকু পেরেছেন অর্থাৎ জাতির সচেতনতা গড়ে তোলা, সেটি তারা শতভাগ করেছেন। আসলে এই স্বার্থান্বেষী মহলের উদ্দেশ্য কি আমাদের জানা নেই। তবে তাদের এমন নিরুৎসাহ এটিই প্রমাণ করে তারা দেশ ও জাতির মঙ্গল চায় না। চায় না ডেঙ্গু সম্পর্কে সকলের সচেতনতা। চায় না একটি ডেংগুমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ডেঙ্গুর বিস্তাররোধে তথ্যমন্ত্রী ও চলচ্চিত্র তারকাদের প্রতীকী কর্মসূচির সমালোচনাকে চিন্তার দৈন্যতা বলে অভিহিত করেছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, উদ্বুদ্ধকরণ কাজটির জন্য যেখানে সাধুবাদ পাওয়ার কথা সেখানে তির্যক সমালোচনা শুনতে হচ্ছে।
গত শুক্রবার (২ আগস্ট) সকালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) প্রাঙ্গণে চলচ্চিত্র তারকাদের নিয়ে এডিস মশা নিধন কর্মসূচিতে অংশ নেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি। সচেতনতামূলক এ অভিযান নিয়ে ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি শ্রেণী অপপ্রচার ও সমালোচনায় মেতে উঠেছেন। সেদিন ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার বিস্তাররোধে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও প্রতীকী মশা নিধন অভিযানের একপর্যায়ে বিএফডিসির সামনের সড়কে পরিচ্ছন্নতায় তথ্যমন্ত্রী নিজে ঝাড়ু হাতে নেন, পরে মশার ওষুধ ছিটানোর মেশিন হাতে নেন। অন্য শিল্পী-কলাকুশলীরাও ঝাড়ু হাতে কর্মসূচিতে অংশ নেন। আর এটি নিয়ে ফেইসবুকে কেউ কেউ তির্যক মন্তব্য করছেন, ব্যঙ্গ করছেন।
বিএফডিসি প্রাঙ্গণে পরিস্কার রাস্তায় এডিস মশা জন্মানোর কারণ নেই জানিয়ে সেখানে মশা নিধনের যৌক্তিকতা নিয়েও কেউ কেউ অহেতুক প্রশ্ন তুলেছেন। অথচ তারা খবরই রাখেননি যে, মশা নিধন অভিযানটি নিছক প্রতীকী। এভাবে মশা নিধনের প্রতীকী অভিযানের বিষয়টি কেউ কেউ না জেনে-না বুঝে, আর কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সমালোচনা করছেন। বিশ্লেষকদের মতে, যারা এমন ট্রল করছেন তাদের মধ্যে অধিকাংশই সরকারবিরোধী মনোভাবাপন্ন। তাদের প্রায় সবাই বিএনপি-জামায়াত ঘরানার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও নানা ধরনের প্রতীকী কর্মসূচি পালন করে আসছে বিভিন্ন সময় থেকে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এ ধরনের প্রতীকী কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন, তিনি তো আর পুরো নয়াদিল্লী পরিস্কার করেননি। একইভাবে মশা নিধনে প্রতীকী কর্মসূচি পালন করায় তথ্যমন্ত্রী ও চলচ্চিত্র শিল্পীরা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। এতে মানুষ এডিস মশা নিধনে উদ্বুদ্ধ হবে, সচেতন হবে। আর যারা কিছুই করেননি, বসে বসে সমালোচনা করছেন তাদের চিন্তার দৈন্যতা ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
কোন মন্তব্য নেই
আপনার মন্তব্য/মতামত প্রদান করার জন্য ধন্যবাদ।
জয়বাংলা নিউজ.নেট।