মুক্তিযুদ্ধে পাক বাহিনীর হামলায় ধ্বংস হওয়া বুদ্ধ মন্দিরের সংস্কার ও শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চায় মহেশখালীর রাখাইন সম্প্রদায়ের
অনলাইন ডেস্ক: কক্সবাজার প্রতিনিধি
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ইং বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের মহেশখালীতে ১৯৭১ সালে ৬মে পাকবাহিনীর গণহত্যা চালানোর সময় ক্ষতিগ্রস্ত রাখাইন বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শন করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী জনাব আ. ক. ম মোজাম্মেল হক এমপি।
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ইং বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের মহেশখালীতে ১৯৭১ সালে ৬মে পাকবাহিনীর গণহত্যা চালানোর সময় ক্ষতিগ্রস্ত রাখাইন বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শন করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী জনাব আ. ক. ম মোজাম্মেল হক এমপি।
পরিদর্মশনকালে মন্ত্রী বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বুদ্ধ মন্দিরটি সংস্কারের চেষ্টা করবেন তিনি। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার অপারেশন সার্চলাইটের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সর্বাত্মক গণহত্যা, ধর্ষণ ও ধ্বংসযজ্ঞের মাধ্যমে স্বাধীনতাকামী বাঙালিকে আতংকগ্রস্ত করা। ২৫ শে মার্চে রাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ও রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে গোটা জাতির উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ৬মে বৃহস্পতিবার কক্সবাজার জেলার মহেশখালীতে ব্যাপক নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডসহ বর্বর আক্রমণ চালায় এই দিনে শ্রী শ্রী আদিনাথ পাহাড়স্থ রাখাইন সম্প্রদায়ের ১৭৮০ সনের আগের পুরানো প্রাচীনতম প্যাগোডা (বুদ্ধ মন্দির) থেকে ৫-৭ টি বুদ্ধ মূর্তি কেটে পাহাড়ের উপর থেকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। এই ভেঙ্গে দেওয়া কয়েকটি বুদ্ধ মূর্তি নিচে রাখাইন বৌদ্ধ বিহারে সংরক্ষিত আছে।
মহেশখালীর বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি। |
আর রাখাইন বৌদ্ধ বিহারে থাকা পিতল বুদ্ধ মূর্তিকে স্বর্ণ মনে করে চোখ তুলে ফেলে তা এখনো প্রমাণ আছে। আর বিহারে থাকা অনেক টাকা মূল্যবান, স্বর্ণ মূর্তি, পুরাতন ধর্মীয় গ্রন্থ লুট করে নিয়ে যায় পাক বাহিনী। পাহাড়ের উপর আক্রমণ করার পর নিচে বৌদ্ধ বিহারে আশ্রয় নেয়া রাখাইন সম্প্রদায়ের শত শত মানুষের নারী পুরুষের উপর গণহত্যা চালায়। বিহারের অধ্যক্ষ ভান্তে উতৈচিংদা মহাথেরো কে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। নিরীহ জনগণ ধর্ম, জাত, ভেদাভেদ ভুলে সবাই কে আশ্রয় ও খাদ্যদ্রব্য দেওয়ার কারণে তাকে এবং তার শিষ্যদের গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া তার শিষ্যদের মধ্যে আছে উক্যছামং(ধুমং),আমেরি,মংছিয়াইন আরো অনেকে নির্যাতিত হয়, মৃত আব্রমং,চিংহ্লামং ও পংউটু সেই দিন প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান ভান্তে উতৈচিংদা মহাথেরো অনেক চেষ্টা করেছিলেন সবাইকে বাঁচানোর জন্য। কিন্তু কয়েকজন বেঁচে গেলেও অন্যদের বাঁচাতে তিনি সক্ষম হলেন না। তিনিসহ শত শত মানুষকে একসাথে লাইন করে ব্রাশ ফায়ার করে গণহত্যা চালানো হয়। বাংলাদেশে অনেকেই মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য স্বীকৃতি পেলেও শহীদ ভান্তে উতৈচিং মহাথেরো ও তার শিষ্যদের এখনো কোন স্বীকৃতি মেলেনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য শহীদ ভান্তে উতৈচিংদা মহাথেরো ও তার শিষ্যদেরকে রাষ্টীয় স্বীকৃতি এবং রাখাইন সম্প্রদায়ের উপাসনালয় বা বিহারে উন্নয়নসহ বধ্যভূমিতে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ প্রতিষ্ঠা করার দাবী জানান মহেশখালীর রাখাইন সম্প্রদায়।
১৯৭১ সালে পাক-বাহিনীর হামলায় ধ্বংসপ্রাপ্ত বুদ্ধমূর্তি |
কোন মন্তব্য নেই
আপনার মন্তব্য/মতামত প্রদান করার জন্য ধন্যবাদ।
জয়বাংলা নিউজ.নেট।