বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার দায় এড়াতে পারেন না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা তৎকালীন সরকারের অনুমোদন ছাড়া হয় নাই। এর দায় খালেদা জিয়ার ওপর বর্তায়। গ্রেনেড হামলার দায় এড়াতে পারেন না তিনি।’
সোমবার (২৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গ্রেনেড হামলার মতো ঘটনা সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না। অন্যান্য সময় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে সমাবেশ হলে আমাদের নেতাকর্মীরা আশপাশের ছাদে অবস্থান নিতেন। কিন্তু সেদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে যারা ছিল, তারা আমাদের কাউকে ছাদে অবস্থান নিতে দেয়নি। আর সেই জায়গা থেকেই গ্রেনেড হামলা করা হয়েছে। তাই ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা তৎকালীন সরকারের মদত ছাড়া হয় নাই। এর দায় খালেদা জিয়ার ওপর বর্তায়। এ দায় তিনি এড়াতে পারেন না’
এই আওয়ামী লীগ নেতা আরও বলেন, ‘আমরা গ্রেনেড হামলার ভিকটিম হিসেবে দাবি করছি; আমি একজন সাক্ষী, সেই হিসেবে আমিও দাবি করছি, এই গ্রেনেড হামলার বিচারের আওতায় খালেদা জিয়াকে আনা হোক, তার শাস্তি আমি দাবি করছি।’
এই হামলা মামলার রায় ঘোষণার আগে বিএনপি বিচারকদের ওপর মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে বলে দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যখন সাক্ষীদের বরাত দিয়ে কথা বলছি, তখন সংবাদ সম্মেলন করে বিচারকদের ওপর মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে বিএনপি। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারের কাজ যখন শেষ পর্যায়ে; তখন রিজভী আহমেদ, মির্জা ফখরুল এই মামলার রায়কে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে সকাল-বিকাল সংবাদ সম্মেলন করে বিচারকদের ওপর মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরি করার চেষ্টা করছেন। অর্থাৎ তারা শুধু হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেই ক্ষান্ত হয়নি, বিচারকে ১০ বছর প্রলম্বিত করেছে।’
বিএনপিকে ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করে নির্বাচনে আসার অনুরোধ জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজকে বিএনপি নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা বলছে। কয়েকদিন আগে তারা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা একটি ভালো কথা বলেছেন। বিএনপি যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং তারা যে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য ইঙ্গিত দিচ্ছে, তার জন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করে নির্বাচনে আসুন। আমরা দেখি নির্বাচনের মাঠে কার কত জনপ্রিয়তা।’
বিএনপি নেতা রিজভী আহমেদ সাধারণত কার্যালয়েই থাকেন উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘গতকাল দেখলাম তিনি একটু দৌড়-মিছিল করছেন। পত্রপত্রিকায় লিখেছে ঝটিকা মিছিল, আসলে সেটা দৌড়-মিছিল ছিল। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য দৌড়-মিছিল করেন কিন্তু তার মুক্তি তো সরকার দিতে পারবে না। খালেদা জিয়ার মুক্তি আদালতের মাধ্যমে ছাড়া অন্য কোনোভাবে হওয়ার সুযোগ নাই। এসব মিছিল করেও তারা আদালতের ওপর মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।’
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা লায়ন চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য রাখেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোল্লা জালাল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু জাফর সূর্যসহ অনেকে।
কোন মন্তব্য নেই
আপনার মন্তব্য/মতামত প্রদান করার জন্য ধন্যবাদ।
জয়বাংলা নিউজ.নেট।