আরব বিশ্বে ‘বিস্ময়সৃষ্টিকারী’ শেখ হাসিনাকে নিয়ে মিশরীয় লেখকের বই

অনলাইন ডেস্ক:
নারী হয়ে একটি মুসলিম দেশের নেতৃত্বে এসে যেভাবে ১৮ কোটি মানুষের দিনবদলের রূপকার হয়ে উঠলেন শেখ হাসিনা, তা আরব বিশ্বের মানুষকে জানাতে বই লিখেছিলেন মুহসিন আল আরিশি। তার সেই বই পড়ে শেখ হাসিনা সম্পর্কে জেনে আরব বিশ্বের সাধারণ মানুষ কতটা মুগ্ধ হয়েছে, তা ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে এসে জানালেন মিশরীয় এই লেখক-সাংবাদিক-গবেষক।

আল আরিশি বলেন, “শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখা গ্রন্থটি পড়ে মিশর ও আরবের অনেক পাঠক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সম্পর্কে তারা জানতই না। তারা জানতে পেরেছে। তারা শেখ হাসিনার কথা জেনে বিস্মিত হয়েছে। তিনি নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিভিন্ন দেশের কাছে পথিকৃৎ। তিনি সফল একজন প্রধানমন্ত্রী, সফল একজন নেতা। তিনি তার কাজ করতে গিয়ে কখনই কারও সাথে আপোস করেননি।”
আল আরিশির লেখা ‘হাসিনা হাকাইক আসাতির’ বাংলা অনুবাদ গ্রন্থের প্রকাশ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার জাতীয় জাদুঘরে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন তিনি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অর্জনের দিকটি তুলে ধরে আল আরিশি বলেন, “নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আরব দেশগুলোর কাছে তিনি অনুসরণীয়। তিনি দেশকে যেভাবে এগিয়ে নিয়েছেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একট মডেলে রূপ নিয়েছে।”
 আল আরিশির বইটির বাংলা অনুবাদ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুর রশীদ। তাকে সহযোগিতা করেছেন একই বিভাগের শিক্ষক কামরুল হাসান ও আব্দুল্লাহ যুবায়ের।
আরবদের কাছে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে বইটির গুরুত্ব প্রসঙ্গে অধ্যাপক রশীদ বলেন, মুহসিন আল আরিশি বাংলাদেশের জন্য, বাঙালি জাতির জন্য ‘অসাধারণ’ এক কাজ করেছেন। এই বইটি আরও অনেক আগে প্রয়োজন ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে আরব দেশগুলো প্রথমে সমর্থন দেয়নি, এমনকি ‘৭৫ এর আগ পর্যন্ত আরব দেশগুলো আমাদের সাথে সম্পর্ক রাখেনি, কেবল ইয়াসির আরাফাত ছাড়া।
“কারণ ওই সব জায়গায় যারা প্রচারণা চালায়, তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় এদেশের মানুষকে হত্যা করেছে, তাদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ, শেখ হাসিনাকে নিয়ে আরিশি লিখেছেন, তিনি এক অসাধ্য সাধন করেছেন।”
 শেখ হাসিনা বর্তমানে পৃথিবীর গবেষকদের মূল দৃষ্টিতে রয়েছেন মন্তব্য করে অধ্যাপক রশীদ বলেন, “এদেশকে কীভাবে তিনি একটি উন্নয়নশীল দেশের দিকে নিয়ে আসলেন, তা এই বইটি পড়লে দেখা যাবে। আমি অবাক হয়েছি, যে বিষয়গুলোতে আমাদের দেশের লেখকরাও দৃষ্টিপাত করেননি, তিনি (লেখক) করেছেন। বঙ্গবন্ধু প্রতি রাতে কোরআন তেলওয়াত করতেন, ১৯৭১ সালে রোজা রাখা অবস্থায় পাকিস্থানিরা, রাজাকাররা কত মা-বোনকে কষ্ট দিয়েছেন, নির্যাতন করেছেন- এই কি মুসলমান? মহানবী (সা.) এর সাথে কোরাইশরা যেমন শত্রুতা করেছিল, বঙ্গবন্ধুর সাথেও এরা তেমন শত্রুতা করেছেন। এই বিষয়গুলো তিনি তার বইয়ে লিখেছেন।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক আরও বলেন, “মুহসিন আল আরিশি বাঙালি জাতির একজন প্রকৃত বন্ধু হিসেবে এই বইয়ের মাধ্যমে পরিচিত হবেন। বাংলাদেশে আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি- এ ধরনের কাজগুলোর প্রচার তারা সে দেশগুলোতে করেন না। এ ধরনের বই প্রকাশিত হলে প্রকৃত তথ্য মানুষ জানতে পারবে।”
 অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষক জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, “প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যেভাবে তিনি দেশের প্রতি কর্তব্য পালন করেছেন, একটি কথাই শুধু বলতে ইচ্ছে করছে, তিনি উপযুক্ত নেতার উপযুক্ত কন্যা।”
মিশরীয় লেখক মুহসিন আল আরিশিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “এটিই সম্ভবত শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিদেশি কোনো লেখকের প্রথম বই। এর মাধ্যমে মিশরের লোকজনও বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনা সম্পর্কে জানতে পেরেছে।”অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন অভিনেতা পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়।

কোন মন্তব্য নেই

আপনার মন্তব‌্য/মতামত প্রদান করার জন‌্য ধন‌্যবাদ।
জয়বাংলা নিউজ.নেট।

Blogger দ্বারা পরিচালিত.